ওজন কমান এই গ্রীষ্মের পানিবহুল সবজি আর ফলে!

ওজন কমান এই গ্রীষ্মের পানিবহুল সবজি আর ফলে!

শুরু হয়েছে গ্রীষ্মকাল। বাড়ছে সূর্যের তাপ। আর এই গ্রীষ্মকাল ওজন কমানোর সেরা সময়। গরমে স্বস্তি পেতে ও তেষ্টা মেটাতে আইসক্রিম, চিনিবহুল শরবত, কোমল পানীয়র বদলে পান করুন প্রচুর পানি ও ঠাণ্ডা গ্রিন টি। ডায়েটে যোগ করুন রসালো ফল, ভিটামিন সি, টক দই ও পানিবহুল সবজি। তাহলে সঠিক ওজন ধরে রাখাটা কঠিন কিছু হবে না!

টমেটো

টমেটো

এখন সারাবছর জুড়েই টমেটো পাওয়া যায়। অথবা শীতে ফ্রিজে মজুদ রেখে সারাবছর খান লাল টমেটো। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের শক্তিঘর এ সবজি শরীরের বাড়তি মেদ ছেঁটে ফেলতে সাহায্য করে। সালাদ তৈরির মজাদার এ উপকরণ লাইকোপেনের উৎকৃষ্ট উৎস। এর শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহের প্রদাহ কমায় ও লেপ্টিনের (ফ্যাটি টিস্যু দ্বারা উৎপাদিত এক ধরনের প্রোটিন) মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কম ক্যালরিযুক্ত টমেটোতে (মাত্র ২২ ক্যালরি) রয়েছে ভিটামিন সি, যা চর্বি কমাতে সাহায্য করে। প্রতিবেলা খাবারে টমেটো সালাদ খান। সালাদ ছাড়াও টমেটোর জুস করে খাওয়া যেতে পারে। গরমে সানট্যান ত্বকের অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। টমেটো রোদে পোড়া দাগ দূর করতেও রাখে ভূমিকা। এছাড়া অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ, হাড়ের জন্য, ক্যানসার রোধেও ভূমিকা রাখে।

তরমুজ

তরমুজ এক মাত্র গ্রীষ্ম ঋতুতেই জন্মে। এটি এমন একটি গ্রীষ্মকালীন ফল, যা খেলে তেষ্টা ও ক্ষুধা দুটোই মিটে যায়। এতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধকারী ভিটামিন এ ও সি, যার কারণে একে বলা হয় সুপারফুড! অনেকে মনে করেন, যেহেতু তরমুজ খেতে খুব মিষ্টি, তাই এতে শর্করার পরিমাণও বেশি হবে। কিন্তু দুই কাপ পরিমাণ (৯২ ক্যালরি) তরমুজ খেতে ক্ষতি নেই। তাছাড়া ফলটির ৯০ শতাংশ পানি হওয়ায় এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে। ফল ও জুস হিসেবে খাওয়া ছাড়াও পুদিনা, লবণ ও হালকা ঝালসহ সালাদ হিসেবে খাওয়া যায় মিষ্টি তরমুজ! চোখ সুস্থ রাখে, মূত্রবর্ধক এবং কিডনি সুস্থ রাখে, প্রদাহবিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। ওজন কমাতে সহায়তা করে। তরমুজ সবসময় দিনের বেলা খাবেন।

ধুন্দুল।

ধুন্দুল

অনেকের ধারণা ধুন্দুল অপুষ্টিকর সবজি। ক্যালসিয়াম ছাড়া অন্যকোন পুষ্টি উপাদান উল্লেখযোগ্য পরিমাণে নেই। ক্যালসিয়ামের পরিমাণ পেঁপে, ঝিঙা, কাঁচাপেঁপে, কাঁচা কলা ও করলার চেয়ে কিছু বেশি। ধুন্দুল আঁশ-যুক্ত সবজি হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। ফাইবারের উৎকৃষ্ট এ উৎস দীর্ঘদিন দেহের গঠন সুন্দর রাখতে সহায়তা করে। স্বল্প ক্যালরিবহুল এ সবজি খেতে ক্ষুধা নিবারক ও সুস্বাদু। তাছাড়া ধুন্দুল খেলে বিপাক ক্রিয়ার উন্নতি ঘটে, যা চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে। নুডলস ও পাস্তা রান্নায় অন্যান্য সবজির সঙ্গে ধুন্দুল ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী ধুন্দুলে জলীয় অংশ ৯২ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৬ মি.গ্রাম., শর্করা ৫.৯ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ২৩ কিলো ক্যালরি। এতে আরো আছে ম্যাঙ্গানিজ ও ভিটামিন সি। তবে ধুন্দুলের এই পুষ্টি, উৎপাদনের স্থান ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ওপর নির্ভরশীল।

গ্রিন আইস টি।

গ্রিন আইস টি

গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিন টির মধ্যকার এপিগ্যালোক্যাটেকাইন চর্বি পোড়ায়, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে ও বাড়তি ওজন কমায়। গ্রিন টিতে ফ্লেভার যোগ করতে তাজা পুদিনা ব্যবহার করুন। রোজ এভাবে পান করলে বাড়তি ওজন হ্রাস পাবে।

টক দই।

টক দই

খাবার টেবিল থেকে মেয়োনেজ সরিয়ে ফেলুন। রাখুন টক দই। তরকারি, সালাদ ও পানীয়তে যোগ করুন উপকারী এ খাবার। প্রতি আধকাপ টক দইয়ে রয়েছে ৩৭০ ক্যালরি। গবেষণায় দেখা গেছে, টক দই ক্ষুধা নিবারণ করে এবং এটি খেলে দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা অনুভূত হয় না।

শসা

পানিবহুল সবজি শসা। তাই দেহকে হাইড্রেটেড রাখে। ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ শসা সালাদ, সুপ ও স্মুদিতে ব্যবহার করা যায়। বিকালের স্ন্যাকসে ভাজাপোড়া বাদ দিয়ে শসার সালাদ খেতে পারেন। এর মধ্যকার কুলিং প্রপার্টি গরমে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে।

লেবু

লেবু

সাইট্রিক অ্যাসিডযুক্ত লেবু স্থূলতা হ্রাসকারী উপাদান। এটি শরীরের ক্ষতিকারক চর্বি ভেঙে ফেলে ওজন দ্রুত হ্রাস করে। গ্রীষ্মে ঠাণ্ডা পানীয় হিসেবে লেবুপানি খেতে পারেন, তা আপনার ওজন কমাতেও সহায়তা করবে। লেবু শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে ও শরীরে শক্তি জোগায়।

আনারস

আনারসেও রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড ও ফাইবার যা হজমে সহায়ক, বিপাকক্রিয়ার উন্নতি ঘটায় ও ওজন কমায়।

আম

গরমের সেরা ফল আম। রসাল এ ফলের নানা রকম স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। অনেকে মনে করেন পাকা আম খেলে ওজন বাড়তে পারে। কিন্তু পরিমিত পরিমাণে আম খেয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

সূত্র: প্রিভেনশন/ সন্ধি ২৪ ডট কম/ বণিকবার্তা

 

সর্বাধিক পঠিত

সাম্প্রতিক