করোনা রোধে ঘরের প্রস্তুতি

করোনা রোধে ঘরের প্রস্তুতি

করোনার আতংকে আমরা শুধু দেশবাসীই না, পুরো বিশ্ব ভুগছি। এটি এমন একটি ছোঁয়াচে ভাইরাস যা হু হু করে বেড়ে চলেছে। কিভাবে এই ভাইরাস বিস্তার করছে বুঝে উঠার আগেই বদলে যাচ্ছে প্রজনন ও বিস্তার প্রক্রিয়া। শুধু তাই না এটি বয়স-লিঙ্গ সব নির্বিশেষে ছড়িয়ে পড়ছে। 

কিন্তু খুশির খবর হচ্ছে, এতটা মহামারী মনে হলেও খুব অল্প যত্ন এবং কিছু সচেতনতার মাধ্যমেই কিন্তু করোনা মোকাবিলা সম্ভব। খেয়াল রাখতে হবে যেন মুখে আমরা হাত স্পর্শ না করি, মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনমানব যুক্ত অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলা ইত্যাদি। এখন তো সব বাসায় হওয়ার কারণে বেশিরভাগ সময়ই বাসায় কাটাতে হয় সবাইকেই। কিন্তু ঘরে থেকেও দরকার কিছুটা নিরাপত্তা, চলুন জেনে নেয়া যাক-

১. বাইরে থেকে বাসায় ফিরেই কাপড় চোপড় পাল্টে ফেলতে হবে। হাত সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধুতে হবে। কাপড় চোপড় সাথে সাথে ধুতে দিয়ে দিলে এবং ভালো মতো গোসল করে নিলে বেশি ভালো।

২. ঘরের মেঝে জীবাণুনাশক দিয়ে মুছতে হবে। বাচ্চা বা বয়স্ক মানুষ থাকলে এটা প্রতিদিন করাই ভালো। ঘরের আসবাবপত্র পরিষ্কার রাখতে হবে। দরজার হাতল, জানালার গ্রিল, সুইচ ইত্যাদি একবার হলেও জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৩. ঘরে থাকলেও সবাইকে ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোঁয়ার অভ্যাস করতে হবে এবং কোনো কিছু খাবার আগে তা ধুয়ে খেতে হবে।

৪. বাজার থেকে আনা বিভিন্ন শাকসবজি ও বাজার সদাই যতটা সম্ভব ধুয়ে শুকিয়ে নিয়ে স্টোর করবেন। যেগুলো ধুয়ে তুলে সম্ভব না যেমন চাল,ডাল,কোয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করে হাত ভালো করে ধুঁয়ে নিবেন।

৫. ভালো হয় বাসায় যদি স্যানিটাইজার, জীবাণুনাশক, রাবিং এলকোহল ইত্যাদি প্রয়োজন মাফিক থাকে। যখন তখন জীবাণুমুক্ত করতে পারবেন এবং সম্ভব হলে বাসাতেই স্প্রে বানিয়ে নিতে পারেন যেটা অনেকেই করছে। স্যানিটাইজার, জীবাণুনাশক বা রাবিং এলকোহল নরমাল কোনো বোতলে ভোরে নিয়ে সামান্য পানি মিশিয়ে স্প্রে এর মুখ (আলাদা করে কিনতে পাওয়া যায়) দিয়ে আটকে দিবেন। তারপরে আপনি বাইরে থেকে আসুন বা কোনো বাজার সদাই সহজেই জীবাণুমুক্ত করে নিতে পারবেন।

৬. বাড়ির প্রতি টা ঘরেই টিস্যু বা কিচেন রোল রাখুন। যাতে কারো হাঁচি বা কাশি আসলে সহজেই টিস্যু হাতের নাগালে পাওয়া যায়।

৭. রান্নাঘরের যাবতীয় দরকারি জিনিস, থালা-বাসন, ছুরি, বটি, সবজি কাটার বোর্ড ইত্যাদি বার বার সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সিঙ্কের আসে পাশে ভালো মতো পরিষ্কার করে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। আরো ভাল হয় যদি আবর্জনা ফেলার পাত্রটি ঢাকনা যুক্ত হয়। যদি তা নাও হয় ময়লা যতটা সম্ভব প্যাকেট বা পলিথিনে মুড়ে ফেলার চেষ্টা করবেন ডাস্টবিনে।

৮. বাসায় যেসকল গৃহকর্মীরা কর্মরত আছেন তাদেরকেও নির্দেশনা নিবেন জীবাণুমুক্ত হওয়ার এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার।

৯. যতটা সম্ভব কোনো ধরনের দাওয়াত দেয়া ও নেয়া থেকে বিরত থাকুন। আগে পরিবারের নিরাপত্তা তারপর নাহয় সামাজিকতা বজায় রাখা যাবে।

এই মহামারী করোনা কারোর জন্যই সুখকর অভিজ্ঞতা না এবং এতদিনের বাসায় থেকে যেন একঘেয়েমিটা আরো বেশি বেড়ে গেছে। কিন্তু তাই বলে পরিবারের বাকি সদস্যদের প্রতি আপনার যে দায়িত্ব-কর্তব্য তা হালকা ভাবে নিলে চলবে না। আগে আপনার পরিবার ও আপনার নিরাপত্তা তারপর সামাজিক দায়বদ্ধতা।বাসায় যথেষ্ট পরিমাণে মাস্ক, ফার্স্ট এইড কিট ও দরকারি ঔষধ-পত্র রাখতে হবে। যারা একটু শারীরিক ভাবে দুর্বল তাদের বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করাই শ্রেয়। সবাই ভালো থাকলে সুস্থ থাকলে সামনে নাহয় এরকম অনেক আন্তরিকতার আনন্দে শামিল হওয়া যাবে। দিনশেষে ঘর হোক আপনার নিরাপদ আশ্রয়।

সাম্প্রতিক

You have successfully subscribed to the newsletter

There was an error while trying to send your request. Please try again.

Living Art Style will use the information you provide on this form to be in touch with you and to provide updates and marketing.