করোনা ভাইরাস থেকে কর্মস্থলকে রাখুন নিরাপদ

করোনা ভাইরাস থেকে কর্মস্থলকে রাখুন নিরাপদ

করোনাভাইরাস, বা কোভিড -১৯ বৈশ্বিক অবস্থা দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হওয়ার তথ্য অসুস্থতার পাশাপাশি  উদ্বেগও  তৈরি করছে। ভাইরাসের বিস্তার এবং এই সম্পর্কিত ভয়ভীতির থাকার সত্ত্বেও এখনও অনেক কর্মজীবীকে প্রতিদিন অফিসে যাওয়া আসা করতে হয়। এই কারনে সবাইকে কর্মস্থলে করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার উপায় ও পদ্ধতি সম্পর্কে জানা থাকা উচিত। এছাড়া করোনা ভাইরাস তাদের  সংস্থার উপর সম্ভাব্য প্রভাব কেমন ফেলছে এবং কর্মচারীরা তাদের সুরক্ষার জন্য কী করতে পারে এই বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা হতে পেতে পারে।

কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আমাদের কিছু শীর্ষ টিপস তুলে ধরা হলো।

নিয়মিত হাত ধোয়ার নিয়ম তৈরি করুন :

কর্মীদের মনে করিয়ে দিন যে ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার  সর্বোত্তম উপায় হ’ল নিয়মিত তাদের হাত ধোয়া এবং তাদের মুখ, চোখ বা নাক স্পর্শ করা এড়ানো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুযায়ী, আপনার হাতে জল এবং সাবান নিয়ে, হাতের পিছনে ঘষে এবং হাতের আঙুলের মাঝে এবং আপনার নখের নীচের ঘষে ২০ সেকেন্ড সময় ধরে হাত পরিষ্কার করুন । আপনার হাত ধোয়ার সময় ২০  সেকেন্ড সময় নিশ্চিত করতে, আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দুবার “হ্যাপি বার্থডে” গানটি শুনতে বা গাইতে পারেন। কর্মচারীদের হাত ধোয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দিতে অফিস ভবনের আশেপাশে এবং বিশেষত বাথরুম এবং খাবার প্রস্তুতির জায়গায় এবং পাবলিক জায়গাগুলিতে হাত ধুয়ে নিন সম্বলিত চিহ্ন এবং সাবান/হ্যান্ডওয়াশ এর ব্যাবস্থা রাখুন। 

নিয়মিত অফিস এলাকা পরিষ্কার করা নিশ্চিত করুন

কর্মক্ষেত্রে বারবার স্পর্শ করতে হয় যেসব জায়গা যেমন ওয়ার্কস্টেশন, লিফট বাটন এবং দরজার লক, হ্যান্ডেল নিয়মিত পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্তকরণ নিশ্চিত করুন। এসব জায়গা জীবাণু মুক্ত করার জন্য ক্লিঞ্জিং পাউডার ব্যবহার করুন এবং ব্যবহারের নিয়ম জানতে লেবেলের দিকনির্দেশগুলি অনুসরণ করুন। এছাড়াও ওয়ার্ক স্টেশনে ব্যক্তিগত ডিভাইস ( ল্যাপটপ, মোবাইল, ট্যাব ) জীবাণু মুক্ত করে রাখার জন্য কর্মীদের স্যানিটাইজার এবং স্প্রে সরবরাহ করে দিতে পারেন ।

অসুস্থ কর্মীদের বাড়িতে থাকতে বাধ্য করুন

স্বাস্থ্যকর্মী এবংবিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থাগুলির কাছ থেকে সুপারিশ করা হয় যে তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতার লক্ষণ রয়েছে এমন কর্মচারীরা যেন ঘরে থাকে। জ্বরের লক্ষণ থাকলে কিংবা জ্বর থাকলে, জ্বরমুক্ত না হওয়া অবধি অফিস আসা থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করুন। 

নিয়োগকর্তারা কর্মচারীদের অসুস্থতা জনিত ছুটি নীতিগুলি নমনীয় রাখুন এবং জনস্বাস্থ্যের দিকনির্দেশনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে তৈরি করুন। নিশ্চিত করুন কর্মচারীরা যেন এসব নীতিগুলোর বিষয়ে অবগত থাকেন। একই সাথে কোনভাবে অসুস্থ থাকাকালীন কাজ করার বিশেষ প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে বাড়ি থেকে কাজ (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) অপশনটিও কাজে লাগাতে পারেন।

ট্রাভেল প্ল্যান সম্পর্কে কর্মীদের সাথে কথা বলুন

কর্মীদের ভ্রমণ গন্তব্যগুলির জন্য যাত্রীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নোটিশগুলি পরীক্ষা করার পরামর্শ দিন। যদি অঞ্চলটি ব্যাপকভাবে করোনায় প্রভাবিত হয় তবে জোরালোভাবে পরামর্শ দিন যে ট্রিপটি স্থগিত বা বাতিল করা হোক। কর্মীরাও যদি ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেন, তবে ভ্রমণের পূর্বে করোনা টেস্ট করিয়ে নেয়া বাধ্যগত করুন। 

কর্মচারীদের সাথে খোলাখুলি আলাপ করে লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

নিয়োগকারীদের কীভাবে  তাদের কর্মক্ষেত্রে কোভিড ১৯  এর প্রভাব কমিয়ে আনা যায় এই বিষয়ে পরিকল্পনা বা পূর্ব প্রস্তুতি গুলো কি রকম হতে পারে তা কর্মীদের সাথে আলোচনা করে গ্রহণ করুন।  যেমন: ভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির মাধ্যমে  কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ হ্রাস,  প্রতিকূল স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন এমন বেশি ঝুঁকিতে থাকা কর্মীদের রক্ষা করা, ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপ বজায় রাখা, ইত্যাদি। তবে মূল বিবেচ্য যেসব  বিষয় নিয়োগকর্তারা অবশ্যই কর্মচারীর ওয়াকিবহাল রাখতে পারেন তাহ হলো- ভাইরাসের তীব্রতা, কর্মীদের উপর ভাইরাসের প্রভাব যে সংক্রমণের ঝুঁকিতে ইতিমধ্যে আছেন এবং কর্মচারীর অনুপস্থিতির হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা সম্পর্কিত নীতিমালা।   

করোনভাইরাস সম্পর্কে এবং আপনার কর্মক্ষেত্রকে কীভাবে সুরক্ষিত করা যায় সে সম্পর্কে আরও জানার জন্য CDC এবং WHO এর মতো স্বাস্থ্য সংস্থাগুলির সাথে যোগাযোগ করুন।

সাম্প্রতিক