করোনা সতর্কতা : জিমে গেলে মেনে চলুন এ নিয়মগুলো

করোনা সতর্কতা : জিমে গেলে মেনে চলুন এ নিয়মগুলো

করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃত মানুষের সংখ্যা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়াই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। করোনাভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েই চলেছে। বদলে গেছে মানুষের স্বাভাবিক দিনযাপন। কোভিড আতঙ্কের জন্য গৃহবন্দি অবস্থায় থেকে অনেকের শরীর ও মন চঞ্চল। যাঁরা নিয়মিত জিমে যেতেন, তাঁরাও দীর্ঘদিন যেতে পারেননি। শারীরিক সুস্থতার জন্য ব্যায়াম জরুরি।

জিম মানেই সেখানেও কিছু লোকজন একসঙ্গে জড়়ো হবেন। কত রকম মানুষ আসেন গা ঘামাতে। তাঁদের কারও মধ্যে যদি সংক্রমণ ঘটে থাকে আর তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে, বসে, তাঁর ব্যবহার করা যন্ত্রপাতি দিয়ে আপনি ব্যায়াম করে থাকেন তা হলে ভয় কমছে কই? তিনি যে ম্যাটে শুয়ে-বসে ব্যায়াম করেছেন, আপনিও তাতে শুয়ে-বসে ব্যায়াম করেন, এই জীবাণু কি আপনার শরীরে ঢুকবে না? যে সমস্ত ট্রেনাররা হাতে ধরে ব্যায়াম করাচ্ছেন, তিনি যদি সংক্রামিত থাকেন, আপনি এড়াতে পারবেন সংক্রমণ? তার উপর ভাল জিম মানেই তা বাতানুকূল। অর্থাৎ ভাইরাস ঢুকলে, বেশ আরামেই সে থেকে যাবে কয়েক ঘণ্টা। কখনও টানা দু’-এক দিনও। তা হলে? যদি জিমে যেতে হয়, তবে অবশ্যই কিছু নিয়মাবলি অনুসরণ করা দরকার।

আবার, নিয়মিত যাঁরা ব্যায়াম করেন, তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সচরাচর তুঙ্গে থাকে। কাজেই ভাইরাস শরীরে ঢুকলেও তাঁকে হারিয়ে দেওয়ার শক্তি তাঁদের রয়েছে এই যুক্তি ফেলে দেওয়ার নয়। কিন্তু যাঁরা সংস্পর্শে আসবেন? পরিবারের খুদে, বয়স্ক বা অন্য সদস্যরা? তাঁদের সামলানোর ক্ষমতা আপনার মতো নাও হতে পারে! তাই চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকবে সংক্রামিত ব্যক্তির সংখ্যা। এ ছাড়া অসুস্থ শরীরে যদি কেউ ব্যায়াম কবেন? ভাইরাস ঢোকামাত্রই তো উপসর্গ দেখা যায় না। কিন্তু তিনিও রোগ ছড়াতে পারেন। তাই করোনা প্রতিরোধে সচেতন হতে হবে সকলকেই।

স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  জিম সেন্টারে সঠিক নিয়ম মেনে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা দরকার। নইলে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়।

কী কী সতর্কতা মেনে চলবেন

ঢোকার আগে সবার থার্মাল স্ক্রিনিং করার নির্দেশ দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।

 কষ্ট হলেও সঠিক নিয়ম মেনে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। কোনোভাবেই মাস্ক খোলা চলবে না।

জিমে যাঁরা কাজ করেন ও যাঁরা জিম করতে আসেন, তাঁদের রোগ প্রতিরোধমূলক ট্রেনিং যথাযথ থাকা দরকার। অর্থাৎ হাত ধোওয়া, মাস্ক পরা, কাফ এটিকেট মেনে চলা ইত্যাদি।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিজপোজেবল গ্লাভস, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার যেন জিমে থাকে ।

জিম সেন্টারে একজন থেকে অন্যজনের মধ্যে কমপক্ষে ছয় ফুট দূরত্ব মেনে চলবেন।

একটি জিম সেন্টারে মোট যত জন লোক, সে অনুযায়ী দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হলে সময় ভাগ করে সেই সময় অনুযায়ী সবাইকে যেতে হবে।

জিমে যাওয়ার সময় নিজের সাবান, স্যানিটাইজার, মাস্ক, গ্লাভস, তোয়ালে, পানির বোতল বহন করুন।

জিমে থাকাকালে চোখ, মুখ, নাকে হাত দেবেন না। মাঝেমধ্যে সাবান দিয়ে হাত ধোবেন বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন।

জিম সেন্টারের ইন্সট্রুমেন্ট গুলোতে হাত দেওয়ার আগে হাত স্যানিটাইজ করতে হবে এবং ইন্সট্রুমেন্ট গুলোও স্যানিটাইজ করতে হবে।

প্রতিটি যন্ত্র, ডাম্বেল, বারবেল, প্রতিটি সুইচ-হাতল, ম্যাট, মেঝে, টয়লেট সিট জীবাণুনাশক দিয়ে ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিষ্কার করতে হবে।

সংক্রমণের আশঙ্কা কমাতে যে সময় জিমে ভিড় কম থাকে, সে সময় যান। ডিজপোজেবল মাস্ক ও গ্লাভস পরে ব্যায়াম করুন। ও জিমের বাস্কেটে সে সব ফেলে ঘরে আসুন।সামান্য ঠাণ্ডা লাগা, হাঁচি-কাশির সমস্যা থাকলে জিমে যাওয়া এড়িয়ে চলুন।

প্রতিদিন জিম সেন্টার ভালো করে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জিম সেন্টার এড়িয়ে চলাই ভালো। জানালা-দরজা খুলে রাখতে পারেন, যাতে বাইরের আলো-বাতাস প্রবেশ করে।

জিম সেন্টার থেকে ফেরার পর দ্রুত গোসল করে নিন এবং পরিহিত কাপড়গুলো সাবান-পানি দিয়ে কেঁচে নিন।

সর্বাধিক পঠিত

সাম্প্রতিক