শীতকালে প্রাণবন্ত থাকার উপায়

শীতকালে প্রাণবন্ত থাকার উপায়

একটু একটু করে হিমের চাদরে মুড়ে যাচ্ছে পৃথিবী। শীতকাল এসে গেছে। শুধু যে স্বাস্থ্যের ১২টা বাজছে তা নয়, সেই সাথে ত্বক এবং কাজের প্রতি উদ্যম ও যেন হারাচ্ছে। এই করোনাকালীন সময়ে বিশেষ যত্ন আর কিছু সতর্কতা না নিলে পস্তাতে হবে পুরো শীতটাই। কীরকম? চলুন জেনে নিই-

১. পানিই জীবন- কথাটা বেশ একঘেয়ে হলেও এটাই সত্যি। শীতকালে কি হয়, শুষ্কতার কারণে আর্দ্রতার অভাবে ত্বকে টান পরে। এই ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে কমপক্ষে লিটার দুয়েক পানি পান করা অপরিহার্য। আর পানি পানের কারণে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়। অর্থাৎ ত্বক ও শরীরের প্রানবন্ত ভাব ধরে রাখতে পানি পানের বিকল্প নেই।

২.এক্সারসাইজ- শীতকালে আলসেমি একদম জেঁকে ধরে যেন আর এই লকডাউন এ তো আলাদা করে কিছু বলার নেই। শরীরের প্রাণবন্ত ভাব আনতে বা ধরে রাখতে কিন্তু শরীরচর্চা সব থেকে উত্তম পন্থা। এই অভ্যাসের আরো অনেক উপকারের মধ্যে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, মেজাজ ফুরফুরে রাখা, মনোযোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি অন্যতম। এই লকডাউন তথা শীতকালে তাই এক্সারসাইজের জুড়ি মেলা ভার।

৩.খাদ্যাভাস- শীতকাল মানেই কিন্তু নানান রকম মৌসুমী সবজি আর ফলের সমাহার। এই মৌসুমেই খাবারে বৈচিত্র্য আনা যায়। মটরশুঁটি, সজনে, টমেটো, ফুলকপি, ছোট আলু, গাজর ইত্যাদি সব্জির নিয়মিত খাবারের তালিকায় রাখা বাঞ্চনীয়। এর পাশে পাশি ফলমূল এর মধ্যে কদবেল,  কামরাঙ্গা, কমলা, কুল, সফেদা, জলপাই ইত্যাদি দৈনিক নাস্তা তে খাওয়া ই যায়। প্রোটিনের জন্য বাদাম, দুধ, ডিম, মাছ-মাংস এগুলো এক বা দুবেলার খাবারে রাখলে আপনার পুষ্টি নিশ্চিত। মোদ্দাকথা, পুষ্টিকর খাবারের  বিকল্প কোনো নির্দিষ্ট মৌসুম না বরং সব মৌসুম জুড়েই। 

৪..রূপচর্চা- এই আবহাওয়ায় ত্বকের যে নিদারুণ অবস্থা হয় তা একদম হাতেনাতে বোঝা যায়। এক্ষেত্রে সামান্য অনিয়মে একদম এলার্জি হয়ে যেতে পারে। তাই ত্বকের ধরন বুঝে (তৈলাক্ত, মিশ্র, শুষ্ক) যত্ন নেয়া যেতে পারে। কমদামী প্রসাধনী বা ক্রিম ব্যবহার থেকে দূরে থাকা উচিত যেহেতু এই মৌসুম তা ত্বকের বারোটা বাজার পক্ষে আদর্শ। এছাড়াও হালকা কোনো ফেসপ্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে ত্বক কে কোমল রাখার জন্য।

গোসলের আগে সবসময় তেল মেখে গোসল করানো যেন আমাদের দাদি-নানীদের আমল থেকেই চলে আসছে। এতে ত্বক থাকে কোমল ও মসৃণ সাথে তেলের চ্যাপচ্যাপে ভাবটাও থাকেনা। আর অনেকের ই এই ঋতুতে পায়ের গোড়ালি ফাঁটার প্রবণতা দেখা যায় যেটা নিমেষেই দূর হবে এই পন্থা অবলম্বন করলে। তেলের মধ্যে অলিভ অয়েল, নারকেলের তেল বা সরিষার তেল ব্যবহারে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

৫.চুলের যত্ন- এই সময় শুষ্কতার কারণে চুলে খুশকি হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এই সময় চুলে উষ্ণ গরম তেল বা লেবু ম্যাসাজ করা যেতে পারে। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্যাক যেমন কলা, ডিম, মেহেদী ইত্যাদির ব্যবহারে বেশ উপকার পাওয়া যায়। সেই সাথে খেতে পারেন আমলকি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যা চুলে জেল্লা আনবে, চুল পড়া রোধ করবে, চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত বানাবে। আগে ভাগে প্রস্তুতি নিলে পুরো শীতকাল জুড়ে খুশকির ঝঞ্ঝাট তো থাকবেই না উল্টা এই শীতেই পান আপনার মনমতো স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল।

এরকম ছোটখাটো যত্ন কিন্তু ভাগ করে নেয়া যায় প্রতিদিনের অভ্যাসে। আর এবারের শীতকালীন প্রস্তুতিটাও কিন্তু বাকি বছর থেকে আলাদা। শুধু যত্ন ই না এবার চাই পাশাপাশি সচেতনতাও। এই উপায় গুলো সকল বয়স উপযোগী, যে কেউ এই উপায় গুলো মেনে চলতে পারবেন, হবেনা কোন বাড়তি খরচ, লাগবেনা কোন বাড়তি আয়োজন। ঘরোয়া ভাবে নিমিষেই এই উপায়গুলো কার্যকর করা সম্ভব। ব্যাস আর কি!  এখন আপনি শীতকাল উপভোগ করতে পারবেন মন খুলে।

সাম্প্রতিক