শীতকালে শরীর সুস্থ রাখার ৫ টি উপায়

শীতকালে শরীর সুস্থ রাখার ৫ টি উপায়

শীতের দিনগুলি আমাদের সবারই কম বেশি আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে যায়। অনেকের জন্য, শীতের মাসগুলি বছরের  বিশেষ কিছু সময় নিয়ে আসে। বনভোজন, পিঠা-পার্বনের উৎসব, বিয়ে-সাদীর অনুষ্ঠান, মেলা, এক্সিবিশন, বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক ক্রিয়াকলাপের মত অনেক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শীতকালকে বরণ করা হয়। দিনগুলি ছোট, এবং সময়গুলি খুব সহজেই উড়ে যায় বলে মনে হয়। কিন্তু এখন কোভিড-১৯ এর কারনে অনেক কিছুই স্থিতিশিল এবং আতঙ্কজনক। শীতকালে আমাদের সবথেকে বেশী সচেতন থাকা উচিত আমাদের স্বাস্থ্য নিয়ে। 

ঠান্ডা তাপমাত্রা, ভিটামিন ডি এর মাত্রা হ্রাস করে ইমিউন সিস্টেম দূর্বল করে দেয় এবং রক্তনালী সংকীর্ণ হওয়ার কারণে এই ঋতুতে অসুস্থতার জন্য আরও বেশি সংবেদনশীল হতে পারে। সুতরাং, আপনি যখন জীবন নিয়ে তাড়াহুড়োয় থাকবেন তখন অবাক হওয়ার কিছু নেই যে আপনার দেহে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কাও ও আপনার ইমিউন সিস্টেমের লড়াই করার ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে।

শীতকালীন অসুস্থতা এড়াতে এখানে কয়েকটি টিপস দেওয়া হয়েছে।

১। সবসময় পানি পান করতে থাকুন – 

আমাদের প্রত্যেককেই এই সময় পানি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে ! পানি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আপনার শরীরের কাজ করার শক্তি সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দেয়। শরীর যথাযথ হাইড্রেশন না পেলে আপনার পেশী এবং জয়েন্টগুলিতে ব্যথা, হজমের সমস্যা, শরীরের তাপমাত্রার পরিবর্তন এবং আরও অনেক সমস্যা অনুভব করতে পারেন। সঠিকভাবে হাইড্রেটেড থাকা আপনার শরীরের সক্ষমতা এবং পরিশ্রমের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার একটি ভাল উপায়। আপনার হাতের কাছে একটি পানির বোতল রাখলে আপনি সহজেই এই অভ্যাসে অভ্যস্ত হতে পারবেন। 

২। আপনার হাত সবসময় পরিস্কার রাখুন- 

কোভিড-১৯ এর এই সময়ে আমাদের সবসময় হাত পরিস্কার রাখা উচিত । আমাদের অসুস্থ হওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হ’ল হাত পরিষ্কার রাখা। আমরা চলতি পথে স্ন্যাকস খাচ্ছি, হাত মেলাচ্ছি, বা জিনিসপত্র ধরছি, এসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াচ্ছি শুধু । সারা দিন চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ করি, বহুবার না বুঝেই জীবাণুগুলো ভিতরে ডেকে আনি। যেকোনো কাজ শেষ করে, আপনার হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন।

৩। নিয়মিত ব্যায়াম করুন- 

নিয়ম করে ব্যায়াম করা ব্যক্তিদের জন্য অনেকগুলি সুবিধা রয়েছে। এটি শরীরকে অবসাদ থেকে মুক্তি দেয় যা সুস্থ্য বোধ করতে সাহায্য করে এবং হতাশা এবং উদ্বেগও হ্রাস করে। এটি কেবল আপনার দেহকেই শক্তিশালী করে না, নির্দিষ্ট রোগের বিকাশের ঝুঁকিও হ্রাস করে। এটি আপনাকে আরও ভাল ঘুমাতে সহায়তা করতে পারে! ব্যায়াম করার জন্য সময় বের করতে অসুবিধা হতে পারে, তবে আপনি যদি কিছুটা সময় বের করতে সক্ষম হন তবে আপনি কখনই অনুশোচনা করবেন না। আপনি যদি সপ্তাহে কিছু নির্দিষ্ট সময় অনুশীলন করার জন্য বরাদ্দ রাখেন তাইলে এই শীতের সময় নিজেকে ফিট রাখতে পারবেন। 

৪।স্বাস্থ্যকর ডায়েট বজায় রাখুন- 

আমরা জানি বছরের এই সময়টিতে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে আমরা বেশ বিলাসী, বিশেষত ছুটির দিনে। বিয়ের দাওয়াত, পিঠা-পার্বনের উৎসব কিংবা পারিবারিক বিভিন্ন পুনর্মিলনীতে আমরা পরিমাণে বেশি খাবো কি না তা নিয়ে চিন্তিত থাকি। আমদের খাওয়ার ব্যাপারে ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত । ভারসাম্য এবং সংযম জীবনের প্রায় যে কোনও কিছুর জন্য উপকারী। আমরা যা কিছু খাচ্ছি তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য একটি ভূমিকা পালন করে, তাই এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা প্রয়োজনীয় ভাল পুষ্টি শরীরকে সরবরাহ করছি কিনা এটি লক্ষ্য রাখা। প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজগুলির অভাবজনিত খাদ্যাভাস আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে তুলতে পারে। আপনার ডায়েট সম্পর্কে নির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।

৫। ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন- 

ঘুম  নিত্যদিনের তালিকায় সবথেকে কম প্রাধান্য পায় আজকাল। ভাল ঘুম শরীর সুস্থ রখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঘুম আমাদের দেহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে এবং পুনরায় চার্জ করতে সাহায্য করে। এটি শরীরের ক্লান্তি হ্রাস করে। ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর পুনরায় প্রানবন্ত বোধ করে। বিশ্রাম নেওয়ার ফলে, সারা দিন ধরে উচ্চ মাত্রার কাজের চাপ থাকার পরেও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং হতাশা এবং উদ্বেগের পরিমাণ হ্রাস করে। আপনার নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের পরিমাণ বাড়িয়ে দেখুন সপ্তাহে কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সাম্প্রতিক