আমলকির মিষ্টি আচার

আমলকির মিষ্টি আচার

দেশীয় ফল আমলকির গুণ সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি। স্বাদে টক হলেও অনেকেই ফলটি খান এর উপকারিতার জন্য। রূপচর্চা, চুলের ঘনত্ব বা স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুলের জন্য আমলকির ব্যবহার বহুল প্রচলিত। হজমের জন্যেও আমলকি খুবই কার্যকর। প্রাচীন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকগণ আমলকির অগনিত স্বাস্থ্য গুন বলে গেছেন। কিন্তু অনেকেই শুধু আমলকি খেতে পারে না এর স্বাদের জন্য। তাই বলে কি পুষ্টি থেকে বাদ যাবে? মোটেও না! শুধু আমলকি মুখে না নিতে পারলেও আচার উপায়ে নেয়া যায়। 

তাই আজকে আমরা বলবো এরকমই একটা আচারের ধরণের কথা যা হলো আমলকির মিষ্টি আচার। আপনি চাইলে ঝাল, টক-ঝাল বা টক-ঝাল-মিষ্টি করেও আচার বানাতে পারেন। যার যেরকম পছন্দ। কিন্তু আজকে এখানে কথা হবে শুধু আমলকির মিষ্টি আচার নিয়ে।তো চলুন ঝটপট জেনে নেই।

যা যা লাগবে:- 

আমলকি – ৫০০ গ্রাম, 

তেঁতুল – ২০০গ্রাম, 

হলুদ গুঁড়া – ১ চা চামচ, 

মরিচ গুঁড়া – ২ চা চামচ, 

মেথি গুঁড়া – ১ চা চামচ, 

লবন – পরিমান মত, 

সরিষার তেল – ২৫০ মিলি লিটার, 

সরিষা – ১ চা চামচ, 

মেথি – আধা চা চামচ, 

গুড় – দেড় কাপ।

যেভাবে করবেন

প্রথমেই আমলকি কেটে ছোট ছোট টুকরা করে নিতে হবে। এরপর তেঁতুল গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে বিচি ফেলে পেস্ট তৈরি করে নিন। তেঁতুলের পেস্টের সঙ্গে হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, মেথি গুঁড়া ও লবণ মিশিয়ে রাখতে হবে। এরপর কড়াইয়ের অর্ধেক তেল দিয়ে গরম হতে সময় দিন। তেল গরম হলে আমলকি গুলো ভেজে নিন। এরপর কড়াই কিছুক্ষন ঢেকে রাখুন। এতে করে আমলকি গুলো নরম হবে। আমলকি গুলো নরম হয়ে এলে তেঁতুলের পেস্ট দিয়ে মাখিয়ে নিব এবং সাথে বাকি তেল টুকু ঢেলে দিব। তেল ঢালার পর ১০ মিনিট নাড়াচাড়া করতে হবে। তারপর কিছুটা মাখা মাখা হয়ে আসলে আমরা গুড় দিয়ে নিব।

এবার অন্য একটা প্যানে তেল নিন ১ টেবিল চামচ পরিমান। তারপর এতে সরিষা ও মেথি ছেড়ে দিবো। যখন এই তেল ফুটতে শুরু করবে তখন আমলকির মিশ্রনে তেলটি ছেড়ে দিব। এই তেলের মিশ্রনটি আমলকির মিশ্রনের সাথে মাখিয়ে নিব। তারপর আচারটি হয়ে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে নিবো। এরপর ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।

এটি আপনি লাঞ্চে খাবারের সাথে, বা খিচুড়ির সাথে বা এমনি এমনিও খেতে পারবেন। যেরকম পুষ্টিকর ঠিক স্বাদেও সেরকম জুড়ি মেলা ভার!

আপনি চাইলে পাঁচফোড়নও যোগ করতে পারেন। আরো ভালো টেস্ট পেতে আচার টি বয়ামে সংরক্ষণ করুন এবং কয়েকদিন রোদে রাখুন। দেখবেন স্বাদ টা আরো ফুটে উঠবে।

আচারের গুণাবলী যদি বলতেই হয় তবে এটি মুখে রুচি আনে, হজম ক্ষমতা বাড়ায়। যেহেতু এতে ফ্রেশ ফলমূল ও মসলা ব্যবহার করা হয় তাই বলতে পারেন এতে কিন্তু বিভিন্ন খাদ্য ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আর বাঙালি খাবারে এক নতুন মাত্রা যোগ করে আচার। এই আচার যদি হয় এমন একটি দেশীয় ফলের যা বারো মাস পাওয়া যায়, একদম ই হাতের নাগালে আর দামেও কম। মোটকথা খুব সহজেই যখন আপনি পাচ্ছেন এত উপকারী ফলের আচার কেন একবার ট্রাই করবেন না বলেন তো? এই লকডাউন এ একবার ট্রাই করেই দেখুন আমলকি কে এই নতুন আঙ্গিকে। বাচ্চা-বুড়ো নির্বিশেষে সবার ই কিন্তু খাবার যোগ্য আচার এটি। বাসায় বানিয়ে রাখুন কয়েক বয়াম এই মজাদার ও সুস্বাদু আচার টি।

সাম্প্রতিক