ত্বকের যত্নে বেকিং সোডার অভাবনীয় কিছু ব্যবহার

ত্বকের যত্নে বেকিং সোডার অভাবনীয় কিছু ব্যবহার

উজ্জ্বল, লাবণ্যময়ী ও সতেজতায় ভরপুর ত্বক কে না চায়! আর ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে আমরা কত কিছুই না করি। অনেকেই অনেক দামি দামি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন, আবার অনেকে বিউটি স্যালনে নিজেকে প্যাম্পার করতে হাজির হন প্রতিমাসেই। তবে সব কেমিক্যালযুক্ত স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টেরই কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। আবার ত্বকের সাথে মানানসই নয় এমন প্রোডাক্টের ব্যবহার বয়ে আনতে পারে বড় বিপর্যয়। তাছাড়া করোনা মহামারীর এই কঠিন সময়ে বিউটি স্যালনে যেতে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। তাই এসময় ত্বকের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন ঘরোয়া উপাদানগুলো। প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নিলে ত্বক ফিরে পাবে তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা।

ঘরে থাকা সহজলভ্য একটি উপাদান বেকিং সোডা। কমবেশি সবার বাড়িতেই মজুদ থাকে এই বেকিং সোডা। চলুন জেনে নেই বেকিং সোডার কিছু অভাবনীয় ব্যবহার যা আপনার ত্বককে কবে স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও লাবণ্যময়।

বেকিং সোডা স্ক্রাব

ত্বকের মৃত কোষ ও ব্লাকহেডস দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন বেকিং সোডা স্ক্রাব। বেকিং সোডা শুধু যে ভালোভাবে ময়লা তুলতে সাহায্য করে তা নয়, বেকিং সোডায় উপস্থিত এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের জীবাণু ধ্বংস করে এবং সেইসাথে ব্রণের প্রবণতা কমায়। যারা দীর্ঘদিন ধরে প্রফেশনাল ফেসিয়াল করাতে পারছেন না তাদের জন্য এই স্ক্রাবিং দারুণ কার্যকর। স্ক্রাবটি তৈরি করতে তিন টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও এক টেবিল চামচ পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। মুখের টি-জোন সহ যেখানে ব্রণ ও ব্লাকহেডস আছে সেসব জায়গায় স্ক্রাবটি ব্যবহার করুন। 

বেকিং সোডা ফেসমাস্ক

স্ক্রাবিং এর পরে ফেসমাস্ক হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন বেকিং সোডা। ফেসমাস্ক যেহেতু ১০-১৫ মিনিট পুরো মুখমন্ডলে মেখে রেখে দিতে হয়, তাই বেকিং সোডার সাথে মেশাতে হবে আরও কিছু উপাদান যা আপনার ত্বকে আদ্রতা ধরে রেখে ত্বকে লাবণ্য ফিরিয়ে আনবে। ফেসমাস্কটি তৈরি করতে লাগবে ১/২ কাপ বেসন, ১ চা চামচ বেকিং সোডা, ১ টেবিল চামচ মধু ও ১/২ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল। প্রথমে সব কয়টি উপাদান একসাথে মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। তারপর পেস্টটি পাতলা করতে অল্প অল্প করে কুসুম গরম পানি মেশান। কিছুক্ষণ পর এটি পুরো মুখে এপ্লাই করুন। মিনিট পনেরো রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

বেকিং সোডার ময়েশ্চারাইজার

যাদের কনুই বা হাঁটু অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায় তারা যেকোন ময়েশ্চারাইজারের সাথে সামান্য বেকিং সোডা মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ত্বক অতিরিক্ত রুক্ষতা থেকে মুক্তি পাবে। একইসাথে কনুই ও হাঁটুর ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

পায়ের যত্নে বেকিং সোডা

দীর্ঘসময় ধরে নতুন জুতা বা টাইট জুতা পরলে আমাদের পায়ে ব্যথা হয়, ফুলে যায়, এমনকি ফোস্কাও পড়ে। এ ধরণের সমস্যায় পড়লে একটি গামলায় গরম পানি নিয়ে তাতে ২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে মিনিট দশেক পা চুবিয়ে রাখুন। এতে আপনার পায়ের অস্বস্তিভাব কেটে যাবে এবং আপনি আরাম পাবেন। গরম পানি ও বেকিং সোডার এই মিশ্রণে পা চুবিয়ে রাখা শুধু যে আরামদায়ক তা নয়; বরং এই মিশ্রণ গোড়ালি ও পায়ের পাতার মৃত কোষ তুলে নিয়ে স্বাস্থ্যকর, তুলতুলে ও উজ্জ্বল লুক দেয়। 

বেকিং সোডার হেয়ারপ্যাক 

মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ততা থেকে মুক্তি পেতে আপনার শ্যাম্পুর সাথে ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগান। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি শুধু যে ত্বকের তেলভাব দূর করবে তা নয়; খুশকি, ছত্রাকের আক্রমণ বা যেকোন ময়লা সাফ করে চুলকে করবে ঝলমলে।

প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে বেকিং সোডা

যাদের অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা রয়েছে বেকিং সোডা তাদের জন্য একটি আশীর্বাদ। প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে বেকিং সোডা ব্যবহার করে ঘামের সমস্যা থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি পেতে পারেন। একটি স্প্রে বোতলে পানি ভরে তার মধ্যে ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা গুলে নিন। এরপর বগলে স্প্রে করুন। এটি ধীরে ধীরে ঘামের প্রবণতা কমায়। এছাড়া ঘামের দূর্গন্ধ, পোকামাকর বা বিভিন্ন ছত্রাকের আক্রমণ প্রতিহত করতে সরাসরি জামাকাপড়েও স্প্রে করতে পারেন।

সাম্প্রতিক