মাস্কনে প্রতিরোধ করার সেরা উপায়
বিশ্বব্যাপী করোনা প্যান্ডেমিকের ফলে আমরা প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত হচ্ছি নিউ নর্মাল জীবনে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনব্যবস্থায় যোগ হচ্ছে নতুন নতুন অভ্যাস। এর মধ্যে সবথেকে বড় পরিবর্তন হচ্ছে ফেস মাস্কের ব্যবহার। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক পরার কোনো বিকল্প খুঁজে পাননি বিশেষজ্ঞগণ। তবে দীর্ঘসসময় মাস্ক পরে থাকার কারণে অনেকেই একনে বা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ এই কারণে গড়ে ওঠা একনের বৈশিষ্ট্য আলাদা হওয়ায় বিশ্বব্যাপী বিশেষজ্ঞরা এই একনেকে ‘মাস্কনে’ নামে অভিহিত করছেন।
যারা দিনের বেশীরভাগ সময় যারা মাস্ক পরে থাকেন অর্থাৎ যারা করোনার এই ক্রান্তিকালে সামনের সারিতে কাজ করছেন তারাই মাস্কনে সমস্যায় বেশী ভুগে থাকেন। এছাড়াও যাদের সেনসিটিভ স্কিন তাদের মধ্যেও মাস্কনে সমস্যা দেখা যাচ্ছে হরহামেশাই। এমনকি আগে যারা কখনোই ব্রণের সমস্যায় ভোগেননি তারাও ভুগছেন এই সমস্যায়। করোনাকালীন উদ্বিগ্নতা, হতাশা বা মানসিক অশান্তিও মাস্কনের অন্যতম প্রধান কারণ। চলুন জেনে নেই মাস্কনে সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত তথ্য-
আপনি কি মাস্কনে সমস্যায় ভুগছেন?
যারা আগে কখনো ব্রণের সমস্যায় ভোগেননি তাদের জন্য বোঝা সহজ যে তারা মাস্ক পরার কারনেই ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন। তবে মাস্কনের রয়েছে কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য যা সাধারণ ব্রণে দেখা যায় না। তো কিভাবে বুঝবেন আপনি আদৌ মাস্কনে সমস্যায় ভুগছেন কিনা?
যদি মাস্ক পরার স্থানসমূহ, যেমন- নাক, গালের দুই পাশ, চোয়াল ইত্যাদিতে অতিরিক্ত চুলকানি, অস্বস্তিভাব, জ্বালাপোড়া, লালচেভাব বা ব্রণ হয় তাহলেই বুঝবেন আপনি মাস্কনের সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ এই একনের সমস্যার সাথে বিশেষজ্ঞরা মিল পেয়েছেন ‘একনে মেচানিকা’ নামক একনে সমস্যার যাতে মূলত অ্যাথলেটরা ভুগে থাকেন।
মাস্কনে হওয়ার মূল কারণ কি?
দীর্ঘসময় মাস্ক পরে থাকার কারণে নাক-মুখ ঢাকা থাকে। ফলে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস আর ঘামের সাথে এক বিশেষ আদ্রতার জন্ম হয়। এই আদ্রতা সৃষ্টি করে ময়লা ও জীবাণু যা আপনার লোমকূপকে বন্ধ করে দেয়। বন্ধ লোমকূপের ময়লা থেকে তৈরি হয় বিশেষ এই স্কিন প্রবলেম যাকে বিশেষজ্ঞগণ বলছেন মাস্কনে।
এছাড়াও তৈলাক্ত ও সেনসিটিভ ত্বকের অধিকারীরা তাদের ত্বকের ধরণের কারণে ভুগছেন এই সমস্যায়। অতিরিক্ত গরম, ঘাম, সার্জিকাল মাস্কের রাসায়নিক উপাদান বা নিম্নমানের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট মাস্কনের জন্য দায়ী।
মাস্কনে প্রতিরোধ করবেন কিভাবে?
মাস্কনে প্রতিরোধ করতে আগে থেকেই মেনে চলতে হবে সতর্কতা। চলুন জেনে নেই কি কি উপায় অবলম্বন করে মাস্কনে প্রতিরোধ করা যায়-
- সার্জিক্যাল মাস্ক, ডেনিম বা খসখসে ধরণের যেকোন মাস্কের পরিবর্তে কটন কাপড়ের আরামদায়ক মাস্ক পড়ুন। এতে বাতাস চলাচলে সুবিধা হওয়ার পাশাপাশি চুলকানি, অস্বস্তিভাব ও জ্বালাপোড়া হবে না।
- মাস্ক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে নিয়মিত মাস্ক পরিবর্তন করুন। কখনো ব্যক্তিগত স্থানে মাস্ক খুলতে চাইলে আগে হাত স্যানিটাইজ করুন।
- ফ্রাগরেন্স ফ্রি বা সুগন্ধিমুক্ত ডিটারজেন্ট দিয়ে মাস্ক ধুয়ে নিন। কারণ মাস্কের তন্তুতে সুগন্ধির ব্যবহার আপনার স্কিনের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- মাস্ক পরার আগে ও পরে খুব ভালোভাবে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। ভালোমানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন এবং যথাসম্ভব মেকআপ এড়িয়ে চলুন।
- রাতের স্কিন কেয়ার রুটিনে যোগ করতে পারেন জেড স্টোন রোলার; যার আরামদায়ক মাসাজ আপনার স্কিনের সারাদিনের ধকল কমিয়ে ত্বককে দেবে আরামদায়ক অনুভূতি।
- সারাদিন পর একবার মুখে আইস মাসাজ করলেও স্কিনে রিল্যাক্সিং ফিল আসবে।
মাস্কনে হলে করণীয় কি?
অনেক সাবধানতা অবলম্বনের পরেও যদি মাস্কনে হয়ে যায় তখন কি করবেন? চলুন জেনে নেই-
- ত্বক পরিষ্কারের কোনো বিকল্প নেই। ক্লিনজিং এর ক্ষেত্রে এমন ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন যা একনে কমায়।
- ভালোমানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- মাস্ক পরার আগে মেকআপ বর্জন করুন। হেভি অথবা মিনিমাল কোনো মেকআপই এসময় করা যাবে না।
- একটানা মাস্ক পরে না থেকে মাঝে মাঝে নিজেকে ব্রেক দিন। আপনি যখন নিজের গাড়িতে বা অফিসরুমে থাকবেন তখন মাস্ক খুলে রাখতে পারেন।
- স্কিনের বিশেষ যত্ন নিতে প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপাদানের সাহায্যে যত্ন নিন।
- প্রয়োজনে ডার্মাটোলজস্টের পরামুর্শ মেনে চলুন।
সর্বাধিক পঠিত
করোনা সতর্কতা : জিমে গেলে মেনে চলুন এ নিয়মগুলো
বিশ্বব্যাপী করোনা প্যান্ডেমিকের ফলে আমরা প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত হচ্ছি...
মাত্র ৫ মিনিটে সেজে উঠুন নিখুঁত সাজে
বিশ্বব্যাপী করোনা প্যান্ডেমিকের ফলে আমরা প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত হচ্ছি...
শীতে ত্বক সুরক্ষায় পেট্রোলিয়াম জেলি
বিশ্বব্যাপী করোনা প্যান্ডেমিকের ফলে আমরা প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত হচ্ছি...
কিভাবে সোয়েটার নির্বাচন করবেন এবং পরিধান করবেন?
বিশ্বব্যাপী করোনা প্যান্ডেমিকের ফলে আমরা প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত হচ্ছি...